নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। সিলেটে যোগদানের পর চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় কাগজে কলমে সমাপ্তি হওয়া ১৪৫৫ টি মামলার জট। তিনি টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে মামলাগুলোর বিশাল জট নিরসনে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বিগত ৫ মাসে ১৪৫৫টি মামলার মধ্যে ৯০৫টি মামলার মুলতবি করতে সক্ষম হয়েছেন। ওয়ারেন্ট তামিলের ক্ষেত্রেও রয়েছে স্মরণকালের সেরা সফলতা।
সিলেটের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র পুলিশ সুপার যার উদ্যোগে সিলেট জেলা পুলিশের মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ২২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করেছেন। সিলেটের ডিআইজি, কমিশনার, এসপিসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা ও জাতির সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগন একই সাথে বসে দুপুরের খাবারের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের অশ্রুসিক্ত ভালবাসায় প্রশংসিত হন এসপি ফরিদ উদ্দিন।
এছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে বিভিন্ন ধরনের পোশাক প্রদানে তিনি ভীষণ প্রশংসা কুড়ান। মাত্র একশত টাকা খরচের মাধ্যমে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেয়ায় দেশব্যাপী আলোচনায় নিজের স্থান করেন তিনি। পুলিশে নিয়োগ ও রদবদলে নেই তার টাকার কোনো চাহিদা। তার সততা, কর্মদক্ষতা ও নিষ্টার ফল ভোগ করছেন সিলেটবাসী। তার নিয়োগের পর থেকে সিলেটের থানাগুলোতে জিডি ও অভিযোগে কোন টাকা লাগে না। পুলিশিং কোন ধরনের হয়রানি নেই বললেই চলে।
পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর কাজ ও কর্মে সিলেটবাসীকে চমক দেখান তিনি। পৃথকভাবে প্রতিটি থানা পরিদর্শন ও থানার আওতাধীন এলাকার সার্বিক দিক বিবেচনা করে তৈরি করেন প্রতিটি থানায় একেকটি টিম। সিলেটের এসপি হিসেবে যোগদানের সূচনালগ্ন থেকে চলতি বছরের জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৩১১টি মাদক মামলা রুজু করে ৩৯০জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠান।
জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ৭২১ টাকা সমমূল্যের ২১ কেজি গাঁজা। অসংখ্য পরিমাণ বিদেশি মদ ও কোটি টাকা মূল্য মানের ১ কেজি হেরোইন জব্দ করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি বিগত ৫ মাসে সিলেটের সবকটি থানায় ১ হাজার ২৩৪টি মামলার বিপরীতে ১ হাজার ২৮জন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন (পিপিএম) এর টিম। সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা, সাহসিকতা, কর্তব্যপরায়ণ, টিমওয়ার্কে বিশ্বাসী এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম দিনে দিনে হয়ে উঠেন সিলেটের ভাল মানুষের পরম বন্ধু ও অপরাধীদের আতঙ্ক।
পুলিশ সুপার হিসেবে সিলেটে যোগদানের পর থেকে বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনার তথ্য উৎঘাটন, জেলা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে গুজব প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেন। বর্তমানে তিনি সিলেটের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছেন একটি আস্থা, ভালবাসা ও নির্ভরতার প্রতীক। একজন পুলিশ কর্মকর্তার মূল কাজ জনগণের সেবা করা। বিপদাপদে তাদের পাশে থাকা পুলিশের সকল কর্মকর্তা সে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এসপি ফরিদ উদ্দিনের দায়িত্ব পালনে রয়েছে আলাদা কৌশল, সততা, নিষ্টা ও পরিস্থিতির ক্ষেত্র বোঝে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহন।
এসপি ফরিদ উদ্দিন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশিত সেবাকে দ্রুত জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেন অনন্য কৌশলে। তরুন এই পুলিশ কর্মকর্তা যোগদানের পর সুনামের সাথে সাধারণ মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তা ছোটবেলা থেকেই দায়িত্বের প্রতি আপোষহীন। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আলোকে সাড়াশি অভিযানের নির্দেশে এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন মাদক ব্যবসা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দমন করা সম্ভব হয়েছে। ফলে শুরু হয় অপরাধীচক্রের নানা হিসাব-নিকাশ।
নানাভাবে চেষ্টা করা হলো নতুন এসপিকে পথে আনার জন্য, কিন্তু কোন প্রচেষ্টাই কাজে এলো না। একের পর এক ধরাশায়ী হতে থাকলো স্থানীয় মাদক সরবরাহকারীদের অনেকেই। আইনী পদক্ষেপের পাশাপাশি তিনি গড়ে তুলেন সামাজিক জনসচেতনতা। গ্রামের নিরীহ মানুষকে হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বিয়ানীবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করেছেন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।
গত ২৯ জুন পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য প্রতারণামূলক টাকা গ্রহণের অভিযোগে আর.আর.এফ নায়েক খোরশেদ আলম ও পুলিশ বাহিনীর জনৈক সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে উভয়কে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠান। কর্মগুনে তিনি ৬মাস সময়ের মধ্যেই সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তার সুনামে পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা গর্বিত । সাধারণ মানুষের বন্ধু সফল এই পুলিশ কর্মকর্তা অপরাধীদের আতঙ্ক।
পুলিশের প্রতি অনেকের যে বিরূপ ধারণা ছিল তা বদলে দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। দুষ্টের দমন, শিষ্টের লালন নীতিতে কাজ করে তিনি এখন জনগণের কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন। সিলেট জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন তরুণ এই অফিসার। থানাগুলোতে নাগরিকদের আইনী সেবা দিতে তার অফিসার ইনচার্জদের প্রতি কঠোর নির্দেশ রয়েছে তার। সিলেট জেলায় যোগদান করেই ৫ থানার ওসিকে বদলি করেন। সিলেটের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে এলাকার সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় সভা সমাবেশ করে জঙ্গি ও গুজব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছেন। মাদক, সন্ত্রাস, ডাকাতসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান ও নিয়মিত অপরাধীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। জেলা পুলিশের শীর্ষ এই অফিসারের কঠোর নির্দেশে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আলোচিত দুটি অগ্নি অস্ত্রসহ গোয়াইনঘাটের আরব আলীকে এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর নির্দেশনায় গ্রেফতার করেন গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো আব্দুল আহাদ। এছাড়াও কোটি টাকা মূল্যের ১ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।